অনলাইন ডেস্ক 144

রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি

পবিত্র রমজানে ব্যবসায়ীরা নীতি-নৈতিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপনে আগ্রহী হবেন, এটা প্রত্যাশিত হলেও বাস্তবে তা লক্ষ করা যায় না। বরং প্রতিবছর রমজান শুরু হওয়ার বহু আগে থেকেই অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজার মাত্রাতিরিক্ত অস্থির করে তোলে। আবার রমজানের ঠিক আগমুহূর্তে সরকারের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবসায়ীরা পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনো কোনো পণ্যের দাম নামমাত্র কমিয়ে দেয়। বছরের পর বছর চলছে তাদের এ অপকৌশল। এভাবে ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর ভোক্তার পকেট থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল অঙ্কের অর্থ। এবারও সেই চক্রটি একই কৌশল অবলম্বন করছে। রমজাননির্ভর পণ্যের দাম দুই মাস আগেই বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অসাধুদের এই কৌশল ওপেন সিক্রেট হলেও তাদের নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা দৃশ্যমান নয়। কর্তৃপক্ষ লোক দেখানো কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যায় তাদের অপকর্ম। এ অবস্থায় ভোক্তাদের বাড়তি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রমজানের সময় এবং এর আগে-পরে।

চলতি বছর ভোগ্যপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার অস্থির থাকবে, এটি অনেক আগেই ধারণা করা গেছে। ডলার সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি-এসব কারণে চলতি বছর ভোগ্যপণ্যের বাজারে কতটা চাপ থাকবে, তাও অনুমেয়। এ প্রেক্ষাপটে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রোধে বছরব্যাপী অভিযান চালানো না হলে ভোক্তাদের দুর্ভোগের অবসান হবে না। অসাধু ব্যবসায়ীরা যেহেতু মাত্রাতিরিক্ত কারসাজির আশ্রয় নিচ্ছে, সেহেতু বাজার তদারকি সংস্থাগুলোকে সেই অনুপাতে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। তদারক সংস্থাগুলো অভিযান পরিচালনার পরও কেন বাজারের অস্থিরতা কমে না, কর্তৃপক্ষকে এর উত্তর খুঁজে বের করতে হবে। বাজারে সিন্ডিকেটের প্রভাব কতটা বেড়েছে, তা বোঝা যায় চিনির দাম বৃদ্ধি দেখে। বেশ কিছুদিন ধরেই সুপারশপগুলোয় দেশি চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ বাধ্য হয়ে আমদানিকৃত চিনি ক্রয় করছে। ডলারের এ সংকটকালেও দেশি চিনি নিয়ে কারসাজি চলছে। প্রশ্ন হলো, তদারক সংস্থাগুলো তাহলে কী করছে? বস্তুত তদারক সংস্থাগুলোর দায়সারা গোছের দায়িত্ব পালনের কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করার সাহস পায়। নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতার কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হয় নিম্ন-আয়ের মানুষ। সব মিলে বাড়ছে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়। যাদের আয় বাড়বে না, তাদের বাধ্য হয়ে কমাতে হবে জীবনযাত্রার মান।

রমজান সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণগুলো হলো-প্রথাগত সরবরাহ প্রক্রিয়া, অতিরিক্ত মজুতের মাধ্যমে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, অপর্যাপ্ত ও সমন্বয়হীন বাজার মনিটরিং। রমজানে বিভিন্ন পণ্যের বাড়তি চাহিদা সামনে রেখে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে তৎপর থাকতে হবে। যেহেতু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির বিষয়টি নতুন নয়, সেহেতু কর্তৃপক্ষের জোরালো নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে। এছাড়া আরও যেসব কারণে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হতে পারে, সেগুলোও চিহ্নিত করে আগে থেকেই নিতে হবে ব্যবস্থা। আসন্ন রমজানে সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ীরাও আন্তরিক হবেন, এটাই প্রত্যাশা।
 

এই বিভাগের আরও খবর

বাবা চলে যাবার আজ তিন বছর
বাবা চলে যাবার আজ তিন বছর

বাবা চলে যাবার আজ তিন বছর

তারুণ্যের অহংকার সৈয়দ মেহেদী রাসেল
তারুণ্যের অহংকার সৈয়দ মেহেদী রাসেল

তারুণ্যের অহংকার সৈয়দ মেহেদী রাসেল

রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি
রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি

রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি

ধনী-গরিবের বৈষম্য কমিয়ে আনা জরুরি
ধনী-গরিবের বৈষম্য কমিয়ে আনা জরুরি

ধনী-গরিবের বৈষম্য কমিয়ে আনা জরুরি

শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান
শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান

শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান

বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস

বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস

close